আমি হয়তো বাঁচতাম,যদি চেহারা আর রক্ত বদলাতে পারতাম। আমাদের মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী।একটা আফসোস আছে যে আমি তোমার বংশে জন্ম নিয়েছি আর তোমাদের রক্ত নিয়ে মরতেছি।
গত কয়েক দিন যাবৎ আমি আর স্থির থাকতে পারছিলাম না,শুধুই অশান্তির দাবা দহে দগ্ধিভুত হচ্ছি।অপারসিভ বেদনায় হৃদয়ে রক্তক্ষরন আর চোঁখে জল ফোয়ারিত হচ্ছে।
গত ১২ জুন ২০১০ শনিবারের কালের কন্ঠ পত্রিকাটি যথারীতি হাতে নিতেই আমি আতকে উঠি।পারিবারিক অ্যালবাম থেকে একটি রঙিন ছবি,গৃহবধু রীতা, স্বামী আর দুই নিস্পাপ সন্তান পায়েল ও পাবনকে বুকে জড়িয়ে ধরে দাড়ায়ে রয়েছে হাস্যোজ্জল চেহারায়।প্রত্যেকের ছবিই যেন নতুন এক স্বপ্নের কথা বলে।দশ বছরের কন্যা সন্তান পায়েলের অপলক মিষ্টি চাহনী যেন এক নতুন দিগন্ত।মনে হচ্ছে চাহনীতে আকাশ ছোয়া স্বপ্ন,বাবার এক কাধে অবলা নিস্পাপ কন্যার কোমল হাত।অন্য দিকে পাবন আর তার মায়ের মন কাড়া হাসি।

গৃহবধু রীতা কি জানত কখনো তার এই সৃতির অ্যালবাম ছবিটি পত্রিকার এত খানি জায়গা দখল করে দেশের বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরন ঘটাবে?
আমার এখন একটাই প্রশ্ন নিস্পাপ পায়েল কেন অমন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল? মরার কত দিন,কত মাস আর কত বছর আগের ঐ ছবিটি? পায়েল আসলে কিইবা বলতে চাইছে চোঁখের ভাষায়? কি লুকান ছিল কচি মনের মেয়েটির চাহনিতে?
কাচা হাতে রং,পেন্সিল ও তুলির আচড়ে ঘরের দেয়ালে যা লেখা ছিল তার একটা পংতি রক্তাক্ষরে ছাপা হয়েছে পত্রিকার প্রথম দুই কলাম জুড়ে।
"আব্বু তোমার বাবা তোমাকে তোমার অপরাধ থেকে বাঁচানোর জন্য যা করছে তাতে আমরা মরে যাচ্ছি।কারন ৬ই মে তোমরা সবাই মিলে যা করেছ তা ভালই করেছ।আমার বাবা আমাদের মরার জন্য স্ট্রেম্পে লিখিত নেয়।আমি পাবন আমাকে ঘৃনা করি"
পাবনের কাচা হাতের লেখায় যা ফুটে উঠেছে তা চির অভীমানি এক সন্তানের পিতার প্রতি অনাদর আর অবহেলার বহিঃপ্রকাশ।বাবা কি সন্তানের প্রতি নির্মম হতে পারে? সন্তানের অমঙ্গল কামনা করতে পারে?
পৃথিবীতে কে তাহলে আপন? কার কাছে আশ্রয় চাওয়া যায়? কার কাছে নিজেকে সপে দিয়ে একটু প্রশান্তি পাওয়া যায়? পাবন যা বাড়ীর দোতলায় বেডরুমের,ডাইনিং রুমের দেয়ালে লিখে গেছে তা একটা করুন পরিনতির নির্মম বর্ননা ছাড়া আর কিছু নায়।
এটা সাহিত্য কি না,এটা আত্ম জীবনী কি না,এটা কোন কেস ষ্টাডি কি না জানি না।তবে এতটুকুই বলতে পারি পাবন আর পায়েলের দেয়ালের লেখাগুলি বিষাদ সিন্ধুকেও হার মানাবে।
কচি মনের কোমল করে নির্ঝর ব্যাথা কথার মালা গাথুনি করে দেয়ালে ঝুলিয়ে রেখে গেছে পিতা আর পারিবারিক অত্যাচারিত বার বছর বয়সের পাবন।বাবার অপকর্ম আর তার মায়ের উপর বাবার অমানবিক অত্যাচার আর নির্যাতনের বিচার জাতির বিবেক সাংবাদিক দাদার কাছে দিয়ে কোন লাভ না হওয়ায় গোটা জাতির কাছে লেখার মাধ্যমে বিচার ভার রেখে গেছে। এ জাতি কি আসলে পারবে পাবনের দেওয়া অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে? আমি বিষিয়ে উঠি পাবনের কথাগুলো পড়ে।
আমার পাজড়ের পিঞ্জরে পাবনের কথাগুলো নাগিনীর নগ্ন থাবার মত বিদতে থাকে।রক্ত যদি রক্তের সাথে নির্মম আচরণ করে,বেঈমানী করে তার ক্ষতিপূরন কে দিতে পারে? শোয়ার ঘরের উত্তরের দেয়ালে পাবন মৃত্যুর আগমুহুর্তে লিখে গেছে - "আব্বু তুমি ও তোমার বাবা-মা, বোনদের কারনে আমরা মরে যাচ্ছি।কারন তুমি ও তোমরা সবাই মিলে যে অপরাধ করছ তাতে আমরা আর বাচঁতে পারলাম না"
দক্ষিনের দেয়ালে লেখা "এই দাদা, তুই না সাংবাদিক??? তোর বাসার দেয়ালে পত্রিকা ছাপায়ে দিলাম।আমার নানা মারা যাওয়ার পর নানু তার শশুরের সঙ্গে ছিল,তুমি কেন ভাল শশুর হতে পারলে না? তুমি কেন ভাল দাদা হতে পারলে না? বাবা যে কান্ড করল তা নিয়ে কেন কথা বললে না? আমি এই ফ্যামিলিতে জন্ম নিয়েছি এটা ভাবতেই ঘৃণা লাগে।তোকে খুন করতে ইচ্ছা করে'
অন্য এক যায়গায় লেখা আছে-" আমাদের মৃত্যুর জন্য ডাইনি দাদী,দাদা,বাবা রাশেদুল কবির দায়ী" মানুষ কেন বলে রক্তে কথা বলে? তাই আমি তোমাদের মত কারোর সঙ্গে বেঈমানী বা মিথ্যা বলতে চাই না।পাশের ঘরে দেয়ালে লেখা মাথা নীচু করে বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভাল কারন মাথা নিচু করে বাঁচা যে যন্ত্রনার ব্যাপার"
আব্বু তোমরাত ঐ মেয়েকে ( স্মৃতি) এ বাসায় আনার চেষ্টা করতেছো কিন্তু ঐ মেয়ে আনার আগেই এ বাড়ী থেকে লাশ বের হবে। আব্বু তোমার মাকে মারলে তোমার খারাপ লাগে,আমার মাকে মারলে আমার খারাপ লাগে না??? আমি সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করি যে আমার বাবা, দাদা-দাদী ও ফুফুদের মত কেউ যেন না হয়। আব্বু আমরা এ ভাবে বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়া আনেক ভাল তাই মরে যাচ্ছি। আমরা জানি যে তোমরা কত বড় মিথ্যুক তাই ২০০৮ সাল থেকে যা কিছু হইতেছে এটা কিন্তু আমাদের মনে আছে।
উপরের কথাগুলো পড়ে মনে হচ্ছে আমার সমস্ত রক্ত ভেতর থেকে বের হয়ে আসছে।রক্তকনা জমাট বেধে যাচ্ছে।এই ঘটনা নিয়ে যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই ব্যাথাতুর ও বেদনাবিদুর।পত্রিকায় যারা বিষয়টি পড়েছে নিজের অজান্তেই চোঁখের জল ফেলেছে আনেকেই।সবার একটাই প্রশ্ন আদৌ কি এ নির্মমতার বিচার হবে??? হায়রে বিবেক! হায়রে জন্মদাতা পিতা! তোমার কাছে একটাই প্রশ্ন- এ কোন পশুত্ব? এ কোন নির্মমতা? এ কোন অসভ্যতা আর বর্বরতা???
( বিঃদ্রঃ লেখাটা কালের কথা পত্রিকায় ২০১০ সালের প্রথম দিকে প্রকাশিত হয়েছিল)
গত কয়েক দিন যাবৎ আমি আর স্থির থাকতে পারছিলাম না,শুধুই অশান্তির দাবা দহে দগ্ধিভুত হচ্ছি।অপারসিভ বেদনায় হৃদয়ে রক্তক্ষরন আর চোঁখে জল ফোয়ারিত হচ্ছে।
গত ১২ জুন ২০১০ শনিবারের কালের কন্ঠ পত্রিকাটি যথারীতি হাতে নিতেই আমি আতকে উঠি।পারিবারিক অ্যালবাম থেকে একটি রঙিন ছবি,গৃহবধু রীতা, স্বামী আর দুই নিস্পাপ সন্তান পায়েল ও পাবনকে বুকে জড়িয়ে ধরে দাড়ায়ে রয়েছে হাস্যোজ্জল চেহারায়।প্রত্যেকের ছবিই যেন নতুন এক স্বপ্নের কথা বলে।দশ বছরের কন্যা সন্তান পায়েলের অপলক মিষ্টি চাহনী যেন এক নতুন দিগন্ত।মনে হচ্ছে চাহনীতে আকাশ ছোয়া স্বপ্ন,বাবার এক কাধে অবলা নিস্পাপ কন্যার কোমল হাত।অন্য দিকে পাবন আর তার মায়ের মন কাড়া হাসি।

গৃহবধু রীতা কি জানত কখনো তার এই সৃতির অ্যালবাম ছবিটি পত্রিকার এত খানি জায়গা দখল করে দেশের বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরন ঘটাবে?
আমার এখন একটাই প্রশ্ন নিস্পাপ পায়েল কেন অমন অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল? মরার কত দিন,কত মাস আর কত বছর আগের ঐ ছবিটি? পায়েল আসলে কিইবা বলতে চাইছে চোঁখের ভাষায়? কি লুকান ছিল কচি মনের মেয়েটির চাহনিতে?
কাচা হাতে রং,পেন্সিল ও তুলির আচড়ে ঘরের দেয়ালে যা লেখা ছিল তার একটা পংতি রক্তাক্ষরে ছাপা হয়েছে পত্রিকার প্রথম দুই কলাম জুড়ে।
"আব্বু তোমার বাবা তোমাকে তোমার অপরাধ থেকে বাঁচানোর জন্য যা করছে তাতে আমরা মরে যাচ্ছি।কারন ৬ই মে তোমরা সবাই মিলে যা করেছ তা ভালই করেছ।আমার বাবা আমাদের মরার জন্য স্ট্রেম্পে লিখিত নেয়।আমি পাবন আমাকে ঘৃনা করি"
পাবনের কাচা হাতের লেখায় যা ফুটে উঠেছে তা চির অভীমানি এক সন্তানের পিতার প্রতি অনাদর আর অবহেলার বহিঃপ্রকাশ।বাবা কি সন্তানের প্রতি নির্মম হতে পারে? সন্তানের অমঙ্গল কামনা করতে পারে?
পৃথিবীতে কে তাহলে আপন? কার কাছে আশ্রয় চাওয়া যায়? কার কাছে নিজেকে সপে দিয়ে একটু প্রশান্তি পাওয়া যায়? পাবন যা বাড়ীর দোতলায় বেডরুমের,ডাইনিং রুমের দেয়ালে লিখে গেছে তা একটা করুন পরিনতির নির্মম বর্ননা ছাড়া আর কিছু নায়।
এটা সাহিত্য কি না,এটা আত্ম জীবনী কি না,এটা কোন কেস ষ্টাডি কি না জানি না।তবে এতটুকুই বলতে পারি পাবন আর পায়েলের দেয়ালের লেখাগুলি বিষাদ সিন্ধুকেও হার মানাবে।
কচি মনের কোমল করে নির্ঝর ব্যাথা কথার মালা গাথুনি করে দেয়ালে ঝুলিয়ে রেখে গেছে পিতা আর পারিবারিক অত্যাচারিত বার বছর বয়সের পাবন।বাবার অপকর্ম আর তার মায়ের উপর বাবার অমানবিক অত্যাচার আর নির্যাতনের বিচার জাতির বিবেক সাংবাদিক দাদার কাছে দিয়ে কোন লাভ না হওয়ায় গোটা জাতির কাছে লেখার মাধ্যমে বিচার ভার রেখে গেছে। এ জাতি কি আসলে পারবে পাবনের দেওয়া অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে? আমি বিষিয়ে উঠি পাবনের কথাগুলো পড়ে।
আমার পাজড়ের পিঞ্জরে পাবনের কথাগুলো নাগিনীর নগ্ন থাবার মত বিদতে থাকে।রক্ত যদি রক্তের সাথে নির্মম আচরণ করে,বেঈমানী করে তার ক্ষতিপূরন কে দিতে পারে? শোয়ার ঘরের উত্তরের দেয়ালে পাবন মৃত্যুর আগমুহুর্তে লিখে গেছে - "আব্বু তুমি ও তোমার বাবা-মা, বোনদের কারনে আমরা মরে যাচ্ছি।কারন তুমি ও তোমরা সবাই মিলে যে অপরাধ করছ তাতে আমরা আর বাচঁতে পারলাম না"
দক্ষিনের দেয়ালে লেখা "এই দাদা, তুই না সাংবাদিক??? তোর বাসার দেয়ালে পত্রিকা ছাপায়ে দিলাম।আমার নানা মারা যাওয়ার পর নানু তার শশুরের সঙ্গে ছিল,তুমি কেন ভাল শশুর হতে পারলে না? তুমি কেন ভাল দাদা হতে পারলে না? বাবা যে কান্ড করল তা নিয়ে কেন কথা বললে না? আমি এই ফ্যামিলিতে জন্ম নিয়েছি এটা ভাবতেই ঘৃণা লাগে।তোকে খুন করতে ইচ্ছা করে'
অন্য এক যায়গায় লেখা আছে-" আমাদের মৃত্যুর জন্য ডাইনি দাদী,দাদা,বাবা রাশেদুল কবির দায়ী" মানুষ কেন বলে রক্তে কথা বলে? তাই আমি তোমাদের মত কারোর সঙ্গে বেঈমানী বা মিথ্যা বলতে চাই না।পাশের ঘরে দেয়ালে লেখা মাথা নীচু করে বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভাল কারন মাথা নিচু করে বাঁচা যে যন্ত্রনার ব্যাপার"
আব্বু তোমরাত ঐ মেয়েকে ( স্মৃতি) এ বাসায় আনার চেষ্টা করতেছো কিন্তু ঐ মেয়ে আনার আগেই এ বাড়ী থেকে লাশ বের হবে। আব্বু তোমার মাকে মারলে তোমার খারাপ লাগে,আমার মাকে মারলে আমার খারাপ লাগে না??? আমি সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করি যে আমার বাবা, দাদা-দাদী ও ফুফুদের মত কেউ যেন না হয়। আব্বু আমরা এ ভাবে বাঁচার চেয়ে মরে যাওয়া আনেক ভাল তাই মরে যাচ্ছি। আমরা জানি যে তোমরা কত বড় মিথ্যুক তাই ২০০৮ সাল থেকে যা কিছু হইতেছে এটা কিন্তু আমাদের মনে আছে।
উপরের কথাগুলো পড়ে মনে হচ্ছে আমার সমস্ত রক্ত ভেতর থেকে বের হয়ে আসছে।রক্তকনা জমাট বেধে যাচ্ছে।এই ঘটনা নিয়ে যাদের সাথে কথা বলেছি তারা সবাই ব্যাথাতুর ও বেদনাবিদুর।পত্রিকায় যারা বিষয়টি পড়েছে নিজের অজান্তেই চোঁখের জল ফেলেছে আনেকেই।সবার একটাই প্রশ্ন আদৌ কি এ নির্মমতার বিচার হবে??? হায়রে বিবেক! হায়রে জন্মদাতা পিতা! তোমার কাছে একটাই প্রশ্ন- এ কোন পশুত্ব? এ কোন নির্মমতা? এ কোন অসভ্যতা আর বর্বরতা???
( বিঃদ্রঃ লেখাটা কালের কথা পত্রিকায় ২০১০ সালের প্রথম দিকে প্রকাশিত হয়েছিল)